জুমবাংলা ডেস্ক: মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বাড়ি ও প্রতিবেশীদের ওপর একাধিকবার হামলা চালিয়েছেন লিখন হাওলাদার। লিখনের দিনমজুর বাবা একমাত্র ছেলেকে সুস্থ করতে ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে শুরু করে পাবনার মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব।
ফলে গত এক যুগ ধরে একটি অন্ধকার ঘরে শিকল বন্দি করে রাখা হয়েছে লিখনকে (৩৪)। ঘটনাটি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের চেঙ্গুটিয়া গ্রামের। লিখন শাহজাহান হাওলাদারের একমাত্র ছেলে।
লিখনের মা রোকেয়া বেগম জানান, গত রমজানের শুরুতে স্বামী শাহজাহান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এখন শয্যাশায়ী। অর্থাভাবে তারও চিকিৎসা হচ্ছে না। এ অবস্থায় স্বামী ও ছেলের চিকিৎসাতো দূরের কথা বর্তমানে তাদের পরিবারে তিন বেলা খাবারও জুটছে না। স্বামী ও ছেলের সু-চিকিৎসার জন্য এলাকাবাসী এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইন সংস্করণের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ছেলে ও শয্যাশায়ী স্বামীকে নিয়ে বিপাকে পরেছেন রোকেয়া বেগম। অতিষ্ঠ হয়ে তিনি বলেন, লিখনের কষ্ট আর সহ্য করতে পারছি না। একটি অন্ধকার ঘরের মধ্যেই শিকল বন্দি অবস্থায় ওর (লিখন) থাকা, খাওয়া ও বাথরুম করতে হয়। ওর কষ্ট দেখে অনেকবার শিকল খুলে দেওয়ার পর বাড়ির ও প্রতিবেশীদের মারধর করায় আবার লিখনকে শিকল বন্দি করে রাখা হয়েছে।
লিখনের মা বলেন, অনেকবার ওর ঘর পরিষ্কার করতে যাওয়ার পর আমাকে মারধর করেছে। অর্থাভাবে কোন উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছি না। নিজের চোখের সামনে সন্তানের এ করুন দৃশ্য আর দেখতে পারছি না। এর চেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে ছেলের মৃত্যু দাবি করেন তিনি।
রোকেয়া বেগম বলেন, বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে লিখন। বাবা শাহজাহান নিজের সম্পত্তি বিক্রি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সর্বশেষ পাবনার মানসিক হাসপাতালেও ছেলের চিকিৎসা করান। এতে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তিনি। ছেলের চিন্তায় গত রমজান মাসের শুরুতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় এখন শয্যাশায়ী অবস্থায় রয়েছেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।