গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের টঙ্গীতে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে শুভ নামের এক কিশোর হাজতির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহত শুভ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানার শ্রীনগর গ্রামের মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে। ওই কিশোরের মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, সে জ্বরে মারা গেছে। তবে কর্তব্যরত ডাক্তারের কোনো মন্তব্য নেই। এ নিয়ে কেন্দ্রে কিশোর ও অভিবাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের অপর কয়েকজন কিশোরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অতিরিক্ত শাসনের কারণে অসুস্থ হয়ে সে মারা গেছে। এটিই প্রথম নয় ইতিপূর্বে এখানে অতিরিক্ত শাসন ও মারধরের কারণে কয়েক হাজতি কিশোরের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়ে তারা।
কেন্দ্রের কম্পাউন্ডার হেলাল উদ্দিন জানান, বেশ কিছু দিন যাবত শুভ জ্বরে ভুগছিল। এক সপ্তাহ আগে ডাক্তার তাকে দেখে ওষুধ দিয়ে যায়। ওষুধ খাওয়ানোর পর সে সুস্থ হয়। দুইদিন পর তার পুনরায় জ্বর আসে। ডাক্তারের পরামর্শে ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষার রির্পোট সব কিছু স্বাভাবিক বলে তিনি জানান। ছেলেটি কেনো জানি দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছিল।
সোমবার সকালে তার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হলে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর সে মারা যায়। তিনি বলেন, কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক কোনো চিকিৎসক নেই।
গাজীপুর সিভিল সার্জনের তত্বাবধানে এখানে সমাজসেবা অধিদফতরের একজন চিকিৎসককে সপ্তাহে একদিন কিশোরদের চিকিৎসা সেবার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রতি সোমবার তিনি সকাল ৯টায় আসেন।
দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক রাশেদুল ইসলামের নিকট কিশোরের মৃত্যু ও তার রোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রে এসে জানতে পারলাম অসুস্থ কিশোরকে টঙ্গী হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তার মৃত্যু ও রোগ সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্য না করে বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়া কিছু বলা যাবে না।
কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রর তত্ত্বাবধায়ক এহিয়াতুজ্জামান জানান, শুভ গত ২৫ আগস্ট থেকে এই কেন্দ্রে রয়েছে। চট্রগ্রাম এলাকার একটি মাদকদ্রব্যের মামলায় শুভকে এখানে পাঠানো হয়। কয়েকদিন যাবত সে জ্বরে আক্রান্ত ছিল। ডাক্তার রাশেদুল ইসলামের তত্বাবধানে শুভর চিকিৎসা চলছিলো। কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে ডাক্তার বলতে পারবে। তাকে শিক্ষকরা পিটিয়েছে এমন তথ্য ঠিক না। এখানে এখন কোনো কিশোরকে নির্মমভাবে শাসন করা হয় না। ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তার লাশ সুরতাল করা হবে।
কিশোর উন্নয়নের কয়েকজন কিশোরের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরেই এই কেন্দ্রে কোনো কোনো প্রশিক্ষক সংশোধনের নামে কড়া শাসন করেন। নির্দয় আচরণ করেন। এ সব কারণে অতীতে বেশ কয়েকটি কিশোর হাজতীর হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, টঙ্গী হাসপাতালে ছেলেটিকে আনার পর তার মৃত্যু হয়। কিশোরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।