জুমবাংলা ডেস্ক : বন্ধুর কথামতো প্রেমিকাকে প্রেমপত্র ও মোবাইল ফোন দিতে গিয়ে বসন্ত কর নামে (২৪) এক তরুণ গণপিটুনির শিকার হয়েছেন। ছেলেধরা সন্দেহে স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
গতকাল রবিবার(২১ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের পীরেরবাজার এলাকার খাতাইরপার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, কমলগঞ্জ পৌরশহরের নরেন্দ্রপুর এলাকার হাবিব মিয়ার সাথে কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের খাতাইরপার গ্রামের এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই তরুণীর সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য একটি মোবাইল ফোন পৌঁছে দিতে হাবিব তার বন্ধু একই এলাকার নরেন্দ্র শব্দকরের ছেলে বসন্ত শব্দকরের সহযোগিতা চায়। বসন্ত বন্ধুর প্রেমে সহায়তা করার জন্য রোববার সন্ধ্যার দিকে হাবিবের দেয়া মোবাইল ফোন ও একটি চিঠি নিয়ে ওই তরুণীর বাড়ি হাজীপুরের খাতাইরপারে যান।
এ সময় স্থানীয় লোকজন বসন্ত শব্দকরকে ছেলেধরা সন্দেহ করে গণধোলাই দেয়। পরে স্থানীয় পীরেরবাজার এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী উত্তেজিত জনতার হাত থেকে বসন্তকে রক্ষা করে একটি দোকানে নিয়ে যান এবং কুলাউড়া থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ বসন্তকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
কুলাউড়া থানার এসআই কানাই লাল চক্রবর্তী জানান, বসন্ত জিজ্ঞাসাবদে জানান, তার বন্ধু হাবিবের প্রেমিকাকে মোবাইল ফোন ও চিঠি দিতে এসেছিলেন। এ সময় ছেলেধরা সন্দেহে স্থানীয়রা তাকে মারধর করে। আমরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।
গণপিটুনির প্রসঙ্গে, পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে এ পর্যন্ত যতগুলো নিহতের ঘটনা ঘটেছে প্রত্যেকটি ঘটনা আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
গুজব ছড়িয়ে কোনো মানুষকে গণপিটুনি দেওয়া ও তাকে হ*ত্যার বিষয়টিকে মব সাইকোলজি বলে মনে করেন মনোরোগবিদ মেহতাব খানম। এই মনোবিজ্ঞানী মনে করেন, একটি সমাজে যখন নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে আতঙ্ক বা নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয় ঠিক সে সময়ে তাদের মনে এক ধরনের মানসিক অবসাদ বাসা বাঁধে। তাতে তারা ভুগতে থাকেন। আর সেই থেকেই সহিংসতা দেখা দেয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষক খন্দকার ফারহানা রহমান বলেন, দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা নেই। তারা মনে করে এই লোকটাকে ছেড়ে দিলে পরে তাকে আর আইনের আওতায় এনে সাজা দেওয়া সম্ভব হবেনা। এজন্য তারা আইন হাতে তুলে নিচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।