জুমবাংলা ডেস্ক : বিয়ে বাড়িতে বাজছে উচ্চস্বরে গান, বর ও কনের পক্ষে মধ্যে চলছে হাসি-ঠাট্টা, খাওয়া-দাওয়া। কনের বাড়ির লোকজন অতিথি অ্যাপায়নে খুবই ব্যস্ত। শ্যালক-শ্যালিকারা বরের সাথে করছে নানা দুষ্টুমি।
কেউবা নিয়ে গেছে বরের জুতা জোড়া। ফেরত পেতে হলে বরকে গুণতে হবে সেলামি। খাওয়া-দাওয়া শেষ। কাজী এসে উপস্থিত। এখনই লিপিবদ্ধ হবে কাবিননামা। কিন্তু ঠিক সেই সময় কনের পক্ষের দলের একজন বলে উঠলো, বরপক্ষ নকল স্বর্ণের গহনা এনেছে। এ নিয়ে শুরু হলো দু’পক্ষের বাকবিতণ্ডা। এক পর্যায়ে স্বর্ণকারের দোকানে গিয়ে পরীক্ষা করে মিলল নকল স্বর্ণের সত্যতা। পরক্ষণেই বর ও বিয়ের ঘটককে গণপিটুনি খেয়ে কনে ছাড়াই ফিরতে হয়েছে বাড়িতে। আর সাথে গুণতে হয়েছে ২ লাখ টাকা জরিমান।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার নয়মাটি এলাকায়।
জানা গেছে, দেড় লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে নকল স্বর্ণের গহনা নিয়ে বিয়ে করতে আসে বর মো. হৃদয় মিয়া (২০)। শুক্রবার রাতে বিয়ে পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর সালিশ বৈঠকে বর পক্ষকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন গ্রাম্য মাতবরা।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলা ধামগড় ইউপির নয়ামাটি গ্রামের আলম মিয়ার কন্যা ইতি আক্তারের (১৮) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী মুছাপুর ইউপির তাজপুর গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে হৃদয়ের ঘটকের মধ্যস্থায় বিয়ে ঠিক হয়। বিয়েতে কন্যাকে ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার দেয়ার চুক্তিতে বর পক্ষ দেড় লাখ টাকা যৌতুক গ্রহণ করে। বিয়ের দিন ধার্য করা হয় ২৫ অক্টোবর শুক্রবার।
শুক্রবার বিয়েতে বর পক্ষের লোকজনদের খাওয়া দাওয়া শেষে বিয়ের কাবিন করতে কাজী এসে উপস্থিত হন। বিয়ে পড়ানোর আগ মুহূর্তে স্বর্ণলংকার দেখতে চান কনের স্বজনরা। পূর্বের কথা মতে ৪ ভরি স্বর্ণের গহনা বের করে দেন বর পক্ষের লোকজন। তবে গহনা নকল বলে ধারণা করেন কনের স্বজনেরা। পরে বর পক্ষকে কনে পক্ষের লোকজন নকল স্বর্ণ বলে চ্যালেঞ্জ করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ড শুরু হয়। পরবর্তীতে স্বর্ণকারের কাছে গিয়ে স্বর্ণ পরীক্ষা করলে সবগুলো গহনা নকল এবং স্বর্ণের তৈরি না বলে জানিয়ে দেয় স্বর্ণকার।
পরে গ্রামবাসী ও কনের আত্মীয় স্বজন উত্তেজিত হয়ে উঠে বর এবং ঘটককে গণপিটুনি দিয়ে বিয়ে পণ্ড করে দেয়। এ ঘটনা গ্রামবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পরলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিয়ে বাড়িতে এসে উপস্থিত হন।
পরে স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকে বসেন উভয় পক্ষের গ্রাম্য মাতবরা। সালিশ বৈঠকে উভয়পক্ষের মধ্যেকার অভ্যন্তরীণ সকল দেনা পাওনা কনে পক্ষের ক্ষতি পূরণ বাবদ বর পক্ষ আগামী ৪০ দিনের মধ্যে দুই লাখ টাকা প্রদান করবেন সিদ্ধান্ত হয়। সালিশ বৈঠকের পর রাতে বর হৃদয় বউকে না নিয়ে একা বাড়ি ফিরে যায়।
মুছাপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আইয়ুব আলী জানান, নকল গহনা নিয়ে বিয়ে করতে আসায় বর ও কনে পক্ষের স্বজনেরা তর্কবির্তক জড়িয়ে পড়ে। পরে ঘটককে মারধর করে বিয়ে ভেঙে দেয়া হয়। বিষয়টি সামাজিকভাবে মিমাংসার চেষ্টা চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।