অনিল চন্দ্র রায়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বামনের কুড়ার বিশ বছরের পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে গেছে। আর প্রয়োজনের তাগিদে এই ভাঙা ব্রিজ দিয়েই ভয়াবহ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ১০ গ্রামের হাজারো মানুষ।
সোমবার (২২ জুলাই) সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়ভিটা বাজার থেকে মাত্র ৩শ’ গজ দূরে অবস্থিত বামনের কুড়ার ৮০ ফিট লম্বা ব্রিজটি। ভেঙে গেছে দুই পাশের র্যালিং এবং বড় বড় গর্তে ধসে পড়েছে পাটাতন। ব্রিজটির পশ্চিম দিকে প্রায় পোয়া কিলোমিটার দূরেই বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ, বড়ভিটা উচ্চ বিদ্যালয় ও বড়ভিটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
প্রতিদিন দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় তিন শতাধিক কমলমতি শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে র্যালিংবিহীন ও পাটাতন ধসে পড়া ব্রিজটি দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। সেই সাথে দশগ্রামের মানুষজন দৈনদিন কাজের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের যেতে হয় ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে। চলাচলে শিক্ষার্থীসহ অনেক পথচারী দুর্ঘটানার কবলে পড়েছে। র্দীঘ পাঁচ বছর থেকে এ ব্রীজ দিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারপরেও গত পাঁচ বছর ধরে শিক্ষর্থীসহ এলাকাবাসী সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গত তিন চার বছরে এই ব্রিজটি থেকে পড়ে শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ দুর্ঘটনায় প্রায় ২০ থেকে ৩০ জন আহত হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী, দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বাররা একধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও জনগণের চরম দুর্ভোগ লাঘবে ব্রিজটির সংস্কার কিংবা নতুন করে নির্মাণের কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তারা। আগে এই ব্রিজ দিয়ে ইজিবাইক, অটোরিকসা, পিকাপ ভ্যান মালামালসহ যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করলেও গত চার-পাঁচ বছর ধরে সব ধরনের যানবাহনগুলোর চলাচল বন্ধ হয়েছে। ফলে এলাকাবাসী ও দূরদূরান্তের অনেকেই এই ভাঙ্গা ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে চলাচলে ভোগান্তিতেই পড়ছেন।
স্থানীয় আব্দুল হক খন্দকার, জয়নাল আবেদিন,মাহাবুল ইসলাম জানান, চার-পাঁচ বছর ধরে এই ভেঙে যাওয়ায় ঝঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে দশগ্রামের হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে।
বড়ভিটা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামিম, মিজু ও বড়ভিটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রোমানা খাতুনসহ অনেকেই জানান, খুব ভয়ে এ ব্রিজটি পাড় হয়ে স্কুলে যেতে হয়। কোনও কোনও দিন সঙ্গে বাবা-মা ও ভাইয়েরা এসে ব্রিজ পাড় করে দিয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা খুব দ্রুত এই ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজের দাবি জানিয়েছেন।
বড়ভিটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খয়বর আলী জানান, গত তিন বছর ধরে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে উপজেলা এলজিইডি অফিস ও মাসিক মিটিংয়েও জানানো হয়েছে। কিন্তু কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও জানান, ইউনিয়ন পরিষদের মালামালগুলো অনেক কষ্টে নিয়ে আসা হয় এবং আজকালের মধ্যেই আবারও নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য উপজেলা এলজিইডি অফিস বরাবরে লিখিত আবেদন করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. আসিফ ইকবাল রাজিব জুমবাংলাকে জানান, এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের কোনও জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় কেউ এ ব্যাপারে জানায়নি। তবে ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণ করা জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।