সাংসারিক টানাপোড়েনে বেঁচে থাকার আগ্রহটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন বছর ৪০-এর পবন কুমার। জীবন যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে তাই আত্মহত্যার সিদ্ধান্তই নেন পেশায় গাড়িচালক ওই ব্যক্তি। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত রবিবার বিষও খেয়েছিলেন তিনি। বিষয়টি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পবনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্ত্রী। কিন্তু, সেখানে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। আর তারপরই শুরু হয় বিপত্তি। একের পর এক মহিলা এসে পবনকে নিজের স্বামী বলে দাবি করতে থাকেন। পরিস্থিতি দেখে চোখ কপালে ওঠে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের। বহু চেষ্টার পরে পবন কুমারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হলেও এই মীমাংসা হয়নি ঘটনাটির। জানা যায়নি পবন কুমারের আসল স্ত্রীর পরিচয়ও। অভূতপূর্ব এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতর উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে হরিদ্বারের রবিদাস বস্তি এলাকা বসবাস করতেন পেশায় গাড়িচালক পবন কুমার। গত রবিবার সন্ধেয় সময় বাড়িতে ফিরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। কিছুক্ষণ বাদে স্বামীকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্ত্রী। খবর দেন স্থানীয় থানাতেও। সেই খবরের ভিত্তিতে হাসপাতালে গিয়ে পৌঁছায় পুলিশ। এদিকে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় পবনের।
এরপরই তার স্ত্রীকে জেরা করেন পুলিশকর্মীরা। পবন কুমার কেন আত্মহত্যা করলেন তার কারণ জানতে চান। এর উত্তরে তাঁর স্ত্রী জানান, চেনাশোনা মানুষদের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। পাওনাদাররা ধার শোধের জন্য চাপ দিতেই চিন্তায় পড়েছিলেন তিনি। কীভাবে টাকা শোধ করবেন তা নিয়ে পরিকল্পনা করছিলেন। এর মাঝেই রবিবার আচমকা বিষ খেয়ে নেন। দেনা মেটাতে না পারার জন্য তিনি আত্মহত্যা করেছেন। একথা শুনে আর কিছু না বলে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান তদন্তকারীরা। তার রিপোর্টেও পাকস্থলীতে বিষ থাকার প্রমাণ মেলে।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পবন কুমার বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে বলেই জানায় পুলিশ। আর তারপর মর্গ থেকে তাঁর দেহটি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু, মর্গ থেকে মৃতদেহটি বের করে পরিবারের হাতে তুলেদেওয়ার সময়ই বাধে গন্ডগোল। আচমকা আরও চারটি মহিলা এসে পবন কুমার তাঁদের স্বামী বলে দাবি করতে থাকেন। বিষয়টি দেখে হতম্ভব হয়ে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ওই মহিলাগুলিকে জেরা করে পবন কুমারের সম্পর্কে অনেক কথা জানা যায়। তবে কোনও মহিলাই পবন কুমারের সঙ্গে যে অন্য মহিলাদের সম্পর্ক ছিল তা জানতেন না বলে দাবি করেন। একে অপরকে চেনেন না বলেও জানান। এরপর পরেরদিন আরও দু’জন মহিলা হাসপাতালে এসে পবন তাঁদের স্বামী বলে দাবি করেন। এর জেরে আরও সমস্যায় পড়ে যান তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পবনের অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা নেই। এতদিন যে ভাড়াবাড়িতে থাকত তার ভাড়াও মেটাতে পারেননি তিনি। হতে পারে তিনি এতগুলি মেয়েকে বিয়ে করে প্রচণ্ড চাপে পড়ে গিয়েছিলেন। তাই আত্মহত্যা করেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।