জুমবাংলা ডেস্ক : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল-মামুনের (২৯) বাড়িতে এক এনজিও কর্মী অনশন করেছেন। কামরুন নাহার (২৪) নামে ওই এনজিও কর্মী মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছাত্রদল নেতা মামুনের চরফলকন মাতাব্বরহাট এলাকার বাড়িতে এ অনশন করেন।
এরই মধ্যে মামুনসহ তার পরিবার ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার রাতে ওই নারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত মামুন চরফলকন ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি এবং একই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য প্রয়াত নজরুল ইসলাম খোকন মেম্বারের ছেলে। অপরদিকে, ভুক্তভোগী নারী রামগতি উপজেলার চরআলগী এলাকার মো. হোসেনের মেয়ে এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কোডেক’র মাঠকর্মী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কামরুন নাহার প্রায় দুই বছর আগে কমলনগর উপজেলা সদর হাজিরহাটস্থ কোডেক’র চরজগবন্ধু শাখায় যোগদান করেন। চরফলকন মাতাব্বরহাট এলাকার খোকন মেম্বারের বাড়িতে সংস্থার সমিতি থাকায় প্রতি সপ্তাহেই তাকে সেখানে যাওয়া-আসা করতে হতো। সেই সুবাধে মামুনের পরিবারের সঙ্গে নাহারের ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে এক বছর পূর্বে মামুনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। যা পরিবারের সকলেই অবগত। এরই মধ্যে গত জানুয়ারি মাসে মামুন বিয়ের কথা বলে তাকে লক্ষ্মীপুর শহরের এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়। এ সময় বিয়ের কথা বলে তার কাছ থেকে একটি কাগজে স্বাক্ষরও নেওয়া হয়। পরে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একসঙ্গে রাত্রীযাপন করেন। এভাবে বিভিন্ন সময়ে মামুন লক্ষ্মীপুরের নিজের বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে তাকে নিয়ে যেতো এবং শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতো।
একপর্যায়ে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে মামুনের চাপে বাচ্চা নষ্ট করা হয়। তাদের এ সম্পর্কের কথা পরিবারের সবাই জানলেও মামুন সামাজিকভাবে তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে কালক্ষেপণ করে। এরই মধ্যে নাহার সংস্থার রায়পুর মোল্লারহাট শাখায় বদলি হয়ে গেলে মামুন তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। উপায়ন্তু না পেয়ে ঈদুল আযহার তিন দিন আগে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবি নিয়ে ওই নারী মামুনের বাড়ি যায়। এ সময় মামুনের পরিবারের সদস্যরা নাহারের ভাইকে খবর দিয়ে আনেন এবং ঈদের এক সপ্তাহ পর সামাজিকভাবে বিয়ের কথা চুড়ান্ত করেন।
অনশনরত অবস্থায় নাহার সাংবাদিকদের জানান, ওই সময় পার হয়ে গেলেও মামুন কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় তিনি স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে অনশন করতে বাধ্য হয়েছেন। মামুনকে ভালোবেসে স্বর্বস্ব হারিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব। মামুনের চাহিদামতো নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রতি মাসের বেতনের টাকাগুলো পর্যন্ত তার হাতে তুলে দিতেন। এখন মামুনের এমন আচরণে মানসিকভাবে তিনি খুবই বিপর্যস্ত। মামুন স্ত্রী হিসেবে তাকে গ্রহণ না করলে আত্মহ’ত্যা ছাড়া তার বিকল্প কোনো পথ নেই বলে তিনি জানান।
এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার কল করা হলেও ছাত্রদল নেতা আব্দুলাহ আল-মামুনের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।