আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ডেঙ্গু রোগের জীবানু বহন করে থাকে যে মশা তার নাম এডিস। বাংলাদেশসহ অনেক দেশে প্রাণসংহারি এই মশা এখন ভয়াবহ আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় এডিস মশার ওপর নতুন একটি সমীক্ষা চালিয়েছে।
ওই গবেষণায় জানা গেছে, আমেরিকার পরিবেশে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিচ্ছে এডিস মশা।
ওই গবেষণায় চাঞ্চল্যকর আরেকটি তথ্য উঠে এসেছে। তথ্যটি হলো, তীব্র ঠাণ্ডাতেও এডিস মশার লার্ভা মরছে না।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৮০ এর দশকে এশিয়ান টাইগার মশা (এডিস অ্যালবপিকটাস) বা এডিস মশার প্রথম সন্ধান মেলে। এরপর এই প্রজাতির মশা এক বছর সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন থেকে সেন্ট লুইতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
নতুন ওই গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চলের মশারা নিজেদের অঞ্চলের চেয়েও অধিক শীতল অবস্থায় বেঁচে থাকতে সমর্থ হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মশারা ‘টাইম-ক্যাপসুল’ জাতীয় ডিম ব্যবহার করছে।
দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চলীয় মশারা দক্ষিণাঞ্চলের তুলনায় শীতকালে শীতের সাথে বেশি খাপ খাইয়ে নিয়েছে।
নতুন এই সমীক্ষায় দেখা গেছে, দ্রুত স্থানীয় অভিযোজন ক্ষমতা বাড়ছে এই প্রজাতির মশাদের।
এপ্লাইয়েড ইকোলজি জার্নালের ২১ আগস্ট সংখ্যায় এ সংক্রান্ত সমীক্ষার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
টাইসন রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক এবং নতুন গবেষণাটির বিজ্ঞানী কিম মেডলে বলেছেন, ওই ঘটনাটি ৩০ বছর সময়ের ধরে ঘটেছিল।
তিনি জানান, এই রোগের ভেক্টর যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে দ্রুত বিকশিত হয়েছে। এটি একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ঘটেছে।
এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে, এডিস মশার প্রজাতিটির যুক্তরাষ্ট্রের আরও উত্তর দিকে ক্রমবর্ধমান অবস্থা বজায় রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।
সাধারনত মশারা বিলম্বিত সময়ে ডিম দেওয়ার ফলে শীতের শুরুর সংক্ষিপ্ত দিনগুলিতে প্রতিক্রিয়া জানায়। এই বিশেষ ডিমগুলিতে একটি নিষিক্ত ভ্রূণ থাকে যা প্রায় হাইবারনেশনের অবস্থায় থাকে। এটা খুব ধীরে ধীরে বিপাকক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে। এর ফলাফলটি মশার টাইম ক্যাপসুলের মতো।
ডিম উৎপাদনের ক্ষমতা যা নিষিক্তকরণের জন্য অপেক্ষা করতে পারে তা নতুন কিছু নয়। এই কৌশলটি মশাকে শীতের সময়ে বাঁচতে সহায়তা করে। তবে এ প্রক্রিয়া শুষ্ক অবস্থার মধ্যেও কাজ করতে পারে।
সকল ধরনের মশা তাদের ডিম স্থির পানিতে পেড়ে থাকে। এবং লার্ভাগুলি জমে থাকা পানিতে বেড়ে উঠে। তবে তারা পানি শুকিয়ে গেলেও বাঁচতে পারে।
মশার ডায়োপজের ডিমগুলি সাধারণ ডিম থেকে আলাদা। এর আগের গবেষণায় দেখা গেছে, উত্তরাঞ্চলীয় মশারা দক্ষিণের মশাদের চেয়ে ডায়াপজের ডিম বেশি রাখে।
নতুন ওই পরীক্ষার জন্য মেডন এবং তার দল নিকটবর্তী শহরগুলি থেকে জীবিত মশার ডিম এবং লার্ভা সংগ্রহ করেছিলেন।
ওই গবেষকরা মশার দ্বারা উত্পাদিত ডায়াপজ ডিম সংগ্রহ করেন। তারপর চারটি ভিন্ন স্থানে নিয়ে শীতার্ত পরিবেশে এদের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়।
সূত্র : ফিস ডট অর্গ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।