জুমবাংলা ডেস্ক: ধ*র্ষণ ও যৌ*ন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সারাদেশে পাড়া-মহল্লা ও প্রতিষ্ঠানে প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে নারী সংহতি-মিরপুর অঞ্চল। মিরপুর ১২ নম্বরের প্রিন্সপ্লাজার সামনে শুক্রবার মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে এ আহ্বান জানানো হয়।
ঢাকার ওয়ারীতে ৭ বছরের শিশু সায়মাকে ধ*র্ষণ ও হ*ত্যা, ধ*র্ষকের শাস্তির দাবি এবং সারাদেশে নারী-শিশু ধ*র্ষণ ও যৌ*ন নিপীড়নের প্রতিবাদে এ সমাবেশ করা হয়।
এ সময় ‘আর কত সায়মার ধ*র্ষণ-খু*নে আপনার নীরবতা ভাঙবে,’ ‘নারীর পণ্যকরণ বন্ধ কর’ এবং ‘তিন বছর হলো শেষ তনু হ*ত্যার বিচার কই?‘ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নানা বয়সী ছেলে-মেয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
এ প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নারী সংহতি-মিরপুর অঞ্চলের আহ্বায়ক মুন্নী মৃ। সমাবেশে সঞ্চালনা করেন মিরপুর অঞ্চলের সদস্য জেরিন সেতু। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কানিজ ফাতেমা, সুলেখা রহমান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি ওয়ারীতে ৭ বছরের শিশু সায়মাকে ধ*র্ষণের পর নৃ*শংসভাবে হ*ত্যা করা হয়। দেশে একের পর এক নারী ও শিশুদের ওপর নৃ*শংস নিপীড়ন-ধ*র্ষণ ও হ*ত্যার ঘটনা ঘটেই চলছে।
গত ৬ মাসে ২০৮ নারী ও শিশু নি*র্যাতনের শিকার হয়েছেন। আগে সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে সাধারণত ক্ষমতাসিনেরা যুক্ত থাকলেও এখন ক্ষমতাহীন ব্যক্তিদেরও এসব ঘটনা ঘটাতে দেখা যাচ্ছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি নিত্যনতুন সহিংসতার জন্ম দিচ্ছে। দেশে নিরাপত্তাহীনতা এমন পর্যায়ে চলে গেছে কে, কখন, কোথায় সহিংসতার শিকার হবে তা কেউ বলতে পারবে না।
বক্তারা বলেন, পুরুষরা নারীর শত্রু নয়। কিন্তু যে পুরুষ নারী-শিশুদের ধ*র্ষণ-নিপীড়ন করে, হ*ত্যা করে সে কারও বন্ধু হতে পারে না। একটি ছেলে শিশু শৈশব থেকেই পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রে, মিডিয়ায়, চলচ্চিত্রে এবং সংস্কৃতিতে নারীকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে চিনতে শেখে। এ সব দেখে বড় হয়ে সে ধ*র্ষক হয়ে ওঠে। যে সমাজ-সংস্কৃতি ধ*র্ষক, নিপীড়ক, অমানুষ তৈরি করে, তাদের মানসিকতা বদলের জন্য রাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই। সায়মার ধ*র্ষক হারুনকে আমরা রাতারাতি গ্রে*ফতার হতে দেখেছি। হয়তো তার বিচার হবে, শাস্তিও হবে। তবে কেবল শাস্তি নিশ্চিত হলেই ধ*র্ষণ, যৌ*ন নিপীড়ন বন্ধ হবে না। সমাজ নারীদের পুরুষের সামনে ভোগ্যপণ্য হিসেবে হাজির করেছে। এ কারণে একজন নিপীড়ক পুরুষ মনে করে সে যা খুশি তাই করতে পারে। পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতার বলেই পুরুষ ধ*র্ষণের মতো অপরাধ করে।
বক্তারা বলেন, একটা দেশে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার বলে কিছু না থাকলে ধ*র্ষণের মতো অপরাধ বেড়ে যায়। আমরা এমন রাষ্ট্রে বাস করছি যেখানে নাগরিক হিসেবে নারীর পূর্ণ অধিকার নেই। সম্পত্তিতে, অভিভাবকত্বে সমানাধিকার নেই, রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা নেই। ঘরে থেকেও শিশু-নারীরা আজ নিরাপদ নয়।
বক্তারা আরও বলেন, ফেনীর নুসরাত থেকে সাহস নিতে হবে, শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যেতে হবে। দেশের এ অনিরাপদ অবস্থাকে প্রশ্ন করতে হবে এবং এ থেকে মুক্তি পেতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ লড়াই ছাড়া এ দুঃশাসন থেকে বের হওয়ার আর কোনো পথ নেই।
নারী সংহতির সমাবেশ বলা হয়, বিচারহীনতা ও দুঃশাসনের চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছে যাওয়া এ সমাজে একা একা পথ চলার কোনো সুযোগ নেই। আর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ঐক্য ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই। নারী-শিশুর জন্য, সব নাগরিকের জন্য নিরাপদ এবং মর্যাদাসম্পন্ন সমাজ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিচারহীনতা, ধ*র্ষণ-যৌ*ন নিপীড়নের বিরুদ্ধে পাড়া-মহল্লা ও প্রতিষ্ঠানে প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তুলতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।