জুমবাংলা ডেস্ক: আমাদের মাঝে এমন কিছু প্রথাগত ধারণা থাকে যার ভেতর থেকে আমরা সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কখনো বের হয়ে আসতে চাই না। যেমন ধরুন, আমরা সবাই জানি প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য খুবই খারাপ। এটা ১০০ বছরে ও মাটির সাথে মেশে না বা পচে না, ফলে পরিবেশের অনেক ক্ষতি হয়।
আপনি কি জানেন, শুধুমাত্র আমেরিকাতেই প্রতিদিন ৫০ মিলিয়ন প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহৃত হয়। প্রতিবছর ৩০০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়। গত এক দশকে আমরা ২০ গুন বেশী প্লাস্টক উৎপাদন করেছি অতীতের তুলনায়। যার বেশীর ভাগই আমরা ফেলে দিচ্ছি এবং শেষ পর্যন্ত জমা হচ্ছে সমুদ্রে। ২,৬৯,০০০ ইউ এস টন প্লাস্টিক প্রতিবছর সমুদ্রে জমা হচ্ছে, যা পৃথিবীর জন্য হুমকি স্বরূপ। আমরা সকলেই জানি প্লাস্টিক আমাদের কত কাজে লাগে কিন্তু এর প্রভাব নিয়ে কি আমরা এখনো ভাবছি?
২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রে কোন প্রানী থাকার জায়গা পাবে না যদি আমরা এভাবেই যেখানে সেখানে এইসব ব্যবহৃত প্লাস্টিক ফেলতে থাকি। তাহলে এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? সমস্যা থাকলে তার সমাধান অবশ্যই আছে। সেই সমাধানটি হল রিসাইকেল। আমরা যদি এইসব প্লাস্টিক ফেলে না দিয়ে রিসাইকেল করি তাহলে এত বিশাল পরিমান প্লাস্টিক সমুদ্রে জমা হতে পারবে না একইসাথে নতুন প্লাস্টিক তৈরির কাচামাল অর্থাৎ ভার্জিন রেসিন ও উৎপাদন করতে হবে না। রিসাইকেল রেজিন দিয়েই আমরা আবার নতুন প্রয়োজনীয় প্লাস্টিক দ্রব্যাদি উৎপাদন করতে পারবো।
এবং আপনি জেনে অবাক হবেন বাংলাদেশে অনেকেই এই মহৎ কাজটি করছে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোকেমিকেল কোম্পানি লিমিটেড – বিপিসিএল অন্যতম যা বাংলাদেশের একমাত্র পেট বোতল রিসাইক্লিং কোম্পানি। বিপিসিএল বছরে ১০,০০০ মেট্রিক টন রিসাইকেল রেজিন উৎপাদন করে যা দিয়ে বছরে ৬,৫০০ মেট্রিক টন প্লাস্টিক বোতল তৈরী হচ্ছে। বিপিসিএল এর উদপাদন ক্ষমতা বছরে ১০,০০০ মেট্রিক টনের বেশী হওয়া সত্ত্বেও তারা এর বেশী উৎপাদন করতে পারছে না। এর পেছনে কারন কি?
লেখার শুরুতেই আমি বলেছি আমাদের এমন কিছু প্রথাগত ধারনা থাকে যা থেকে আমরা কখনোই বের হয়ে আস্তে চাই না। ঠিক তেমনি আমাদের মাঝে একটি ধারনা আছে যে ফেলে দেয়া বোতল থেকে যে বোতল তৈরি হয় তার গুনগত মান অবশ্যই অনেক খারাপ। এই একটি ভুল ধারনার কারনে আমরা প্রতিদিন আমাদের পরিবেশকে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছি। কারন এই ধারনাকেই পুজি করে ব্যবসা করছে অনেক কোম্পানি। দিন দিন ভার্জিন প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েই চলছে ফলে উৎপাদন বাড়ছে।
এখনো সময় আছে আমাদের হাতে আমাদের পরিবেশকে বাঁচানোর। আসুন এখনই সতর্ক হই। বাজারে চাহিদা সৃষ্টি করে ভোক্তা আর সেই ভোক্তা আমরাই। তাই আমরাই পারি বাজারে রিসাইকেল প্লাস্টিকের চাহিদা সৃষ্টি করতে। চাহিদা যখনই বাড়বে সব উৎপাদন প্রতিষ্ঠান ভার্জিন রেজিনের বদলে রিসাইকেল রেজিন উৎপাদন শুরু করবে। তাই এখনই সময় নিজের দায়িত্বটা পালন করার। অন্যথায় অনেক দেরি হয়ে যাবে।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, গ্রো ইউর রিডার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।