জুমবাংলা ডেস্ক : একমাস পর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা মনিরা (১২) খাতুনের। এরই মাঝে তার বাবা সাঁথিয়া উপজেলার তলট গ্রামের মনিরুল ইসলাম শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) মনিরার বিয়ে ঠিক করেন। বিকেলে বরযাত্রীরা আসেন। খাওয়া-দাওয়ার পর্ব শেষ হয়। ডাকা হয় কাজীকে। বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যা বিয়ে বাড়ির আড্ডাকে আরো জমজমাট করে তোলে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও সন্ধ্যায় বিয়ে পড়ানোর আগ মুহূর্তে সেখানে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস. এম জামাল আহমেদ, সাঁথিয়া থানার ওসি আসাদুজ্জামান ও পুলিশ ফোর্স নিয়ে হাজির হন। তাদের দেখে পালিয়ে যান বরপক্ষ। বাল্য বিয়ের হাত থেকে রক্ষা পায় মনিরা। তবে ঘটকসহ তিনজনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করে তাদের কারাদণ্ড দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
সাঁথিয়া উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মনিরা নামের এ বালিকাটির পাশের বেড়া উপজেলার কাবাসকান্দা গ্রামের ভজা সেখের ছেলে গোলাম রাব্বি সেখ (২৪) এর সাথে শুক্রবার বিয়ের দিন ধার্য হয়। এ বিয়েতে যৌতুকের পরিমাণ নির্ধারিত ছিল ৪০ হাজার টাকা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম জামাল আহমেদ শুক্রবার বিকেলে গোপনসূত্রে এ বাল্য বিয়ের খবর পান। তিনি সাঁথিয়া থানার ওসি ও পুলিশ ফোর্স নিয়ে তাৎক্ষণিক রওয়ানা দেন বিয়ে বাড়িতে। তাদের দেখে বরসহ বরপক্ষের লোকজন পালিয়ে গেলেও বাল্য বিয়ে দেবার চেষ্টায় বিয়ের আসর থেকে ঘটক মেয়ের নানা ইসমাইল হোসেন (৫৫), বরের চাচা আনোয়ার হোসেন (৩২) ও বরের বন্ধু শাহীন শেখকে (২২) আটক করা হয়।
সেখানে সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম জামাল আহমেদ ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর ৮ ধারা মোতাবেক প্রত্যেককে ১ মাস করে কারাদণ্ড দেন। পরে ওই ছাত্রীটির মা হাসিনা খাতুন মনিরার ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবেন না মর্মে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে মুচলেকা দিয়ে মেয়েকে বুঝে নেন। সাজাপ্রাপ্ত তিনজনকে পুলিশে দেয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম জামাল আহমেদ জানান, ৫ম শ্রেণির ছাত্রী মনিরা খাতুনের লেখাপড়া বাবদ সব ব্যয়ভার দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসন থেকে বহন করা হবে। তিনি জানান, শনিবার থেকেই মনিরা আবার স্কুলে যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।