আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ২২শে অগাস্ট ব্যাপক প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। প্রত্যাবাসন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রস্তুতি থাকলেও রোহিঙ্গাদের অনাগ্রহের মুখে ভেস্তে গেছে দ্বিতীয় দফার এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া।
প্রত্যাবাসন ব্যর্থ হওয়ার খবর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের পাশাপাশি ছাপানো হয়েছে মিয়ানমারের সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও। ইংরেজি কিংবা স্থানীয় ভাষায় প্রকাশিত এসব সংবাদ মাধ্যমে অবশ্য একই ধরণের গুরুত্ব পায়নি এই সংবাদটি।
কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম এটিকে গুরুত্বের সাথে প্রথম পাতাতেই প্রকাশ করলেও অনেক পত্রিকাই এটিকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি।
মিয়ানমারের কয়েকটি সংবাদপত্রে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ক সংবাদটি কিভাবে প্রকাশ ও প্রচার করা হয়েছে তা দেখার চেষ্টা করেছে বিবিসি বাংলা।
দ্য ইরাবতী: দ্য ইরাবতী পত্রিকার অনলাইনে প্রকাশিত প্রথম প্রতিবেদনটিই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে। সংবাদটির শিরোনাম করা হয়েছে, “নো রোহিঙ্গা রিটার্ন টু মিয়ানমার অন ঢাকা’স অফিসিয়াল রিপ্যাট্রিয়েশন ডেট” বা ঢাকার নির্ধারিত প্রত্যাবাসনের দিনে মিয়ানমারে আসেনি কোন রোহিঙ্গা।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধায়ন করতে রাখাইনের সিত্তে-তে রয়েছেন দেশটির সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক ইউনিয়ন মিনিস্টার ইউ উইন মিয়াত আয়ি।
তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার এখনো কোন খবর পাইনি আমরা। তবে বিষয়টি দেখছি।”
অনলাইন পাতার কিছুটা নিচের দিকে আরো একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে রোহিঙ্গা বিষয়ে। যেখানে মিয়ানমার সফররত চীনের রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় নেপিদোর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে বেইজিং।
দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার: মিয়ানমারের দৈনিক এই পত্রিকার ২৩শে অগাস্টের প্রিন্ট সংস্করণের প্রথম পাতায় কোথাও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের খবরটি ছাপানো হয়নি। বরং রোহিঙ্গা সম্পর্কিত খবর স্থান পেয়েছে পত্রিকাটির তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম পাতায়।
তৃতীয় পাতায়, নেপিদো থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি ছাপানো হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে যে, গত ১৯শে অগাস্ট বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সব প্রস্তুতি নেয়ার খবরের পর রোহিঙ্গাদের গ্রহণের সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে মিয়ানমারও।
তবে ২২শে অগাস্ট রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের খবরও ছাপা হয়েছে আলাদা করে। প্রথম পাতায় স্থান না পেলেও চতুর্থ পাতায় প্রত্যাবাসনের খবর ছেপেছে পত্রিকাটি।
প্রত্যাবাসনের দিন অর্থাৎ ২২শে অগাস্ট ঘোষণা থাকলেও কোন রোহিঙ্গা আসেনি বলে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। যার শিরোনাম করা হয়েছে, ‘মিয়ানমার রেডি ফর রিপ্যাট্রিয়েশন, বাট নো রিটার্নিজ ইয়েট’ অর্থাৎ মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য তৈরি থাকলেও কোন রোহিঙ্গা এখনো আসেনি।
খবরটিতে বলা হয়, মিয়ানমারের তং পিও লেতওয়ে অভ্যর্থনা কেন্দ্রে প্রস্তুত ছিলো দেশটির কর্তৃপক্ষ। যেখানে রাখাইন রাজ্যের বিদ্যুৎ, শিল্প ও পরিবহণ মন্ত্রী ইউ অং কিয়াও জান সহ আসিয়ানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বছরের ১৫ই নভেম্বরও একই ধরণের একটি প্রত্যাবাসন হওয়ার কথা ছিলো বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
পত্রিকাটির ৫ম পাতায় ছাপানো হয়েছে চীনের রাষ্ট্রদূতের মিয়ানমার সফরের খবর। সেখানে বলা হয়েছে যে, সেনা প্রধান মিন অং লাইং চীনের রাষ্ট্রদূত মি. চেন হাইকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন।
পরে পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং শান্তি আলোচনায় চীনের সহযোগিতা রয়েছে।
মিয়ানমার নিউজ ডট নেট: মিয়ানমারের আরেকটি দৈনিক মিয়ানমার নিউজ ডট নেট তাদের অনলাইনের প্রথম পাতার প্রথম খবরটি প্রকাশ করেছে রোহিঙ্গাদের নিয়ে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।