অনিল চন্দ্র রায়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বিলুপ্ত ছিটমহলের শিক্ষিত বেকার যুব-যুবতীদের দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের আওতায় ৬০ জন যুবক-যুবতীকে আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
ভারতের সীমানা থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ফুলবাড়ী উপজেলার ভেতর সবচেয়ে বড় ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার শিক্ষিত বেকার যুব-যুবতিদের দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে আইসিটি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের অধীন আইটি সাপোর্ট টেকনিশিয়ান প্রকল্পের আওতায় এ প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়। মঙ্গলবার সকালে বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার সমন্বয় পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এ সময় বঞ্চিত জনপদের যুবক-যুবতী ২৫ দিন ধরে আইটি প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এই প্রশিক্ষণ চলবে ৭২ দিন। প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিটি প্রশিক্ষণার্থীদের ৫ হাজার ৪০০ টাকা ও সনদ প্রদান করা হবে।
প্রশিক্ষণ নেওয়া জাকির হোসেন, কৃষ্ণা রানী ও রেবেকা খাতুন জানান, ৬৮ বছর ছিটমহলবাসী অবরুদ্ধ জীবন-যাপন করেছে। আমরাও মিথ্যা তথ্য দিয়ে পড়া লেখা শিখেছি। কিন্তু পড়ালেখা শেষ হলেও চাকরি করার সুযোগ ছিল না। ফলে বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে দিন কেটেছে আমাদের। ছিটমহল বিনিময়ের পর আমরাও এখন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতে পারি। আমাদের ছোট ভাই, বোনসহ অনেকেই স্কুল-কলেজে পড়ছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের আওতায় মাতৃভুমিতে বসে স্বাধীনভাবে ৭২ দিনের আইটি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছি। খুবেই ভাল লাগছে আমাদের। আশা করছি এই প্রশিক্ষণ শেষে নিজেদের ভাগ্যেন্নয়নের জন্য ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।
একই কথা বললেন প্রশিক্ষনার্থী আমিনুল ইসলাম, তানিয়া আক্তার, মেরিনা খাতুন ও খাদিজা আক্তার। তারা বলেন, বাংলাদেশের নারীরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তাতে সরকার ছিটমহল বিনিময়ের পর থেকে সমান অগ্রাধিকার দিয়ে ছিটমহলের মেয়ের এগিয়ে নিতে কাজ করছে। এখন মনেই হচ্ছে না আমরা ৬৮ বছর পিছিয়ে ছিলাম। এই প্রশিক্ষণ পেয়ে আমরা খুবই খুশি। প্রযুক্তির সাথে আমরাও মেয়েরা আর পিছিয়ে থাকবো না। সমানভাবে আমরা দেশের উন্নয়ন ও পরিবারের উন্নয়নের জন্য আমরা মেয়েরাও সহযোগিতা করতে পারবো।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সহকারী প্রোগ্রামার আজমল আবসার জুমবাংলাকে জানান, সরকার বিলুপ্ত ছিটমহলে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিলুপ্ত ছিটমহলের যে ৬০ জন যুবক-যুবতীর মাঝে আইটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আশা করি, এই ৬০ জন যুবক-যুবতী প্রশিক্ষণ শেষে নিজেদের ভাগ্যেন্নয়নের জন্য ঘুরে দাঁড়াবে এবং বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।