বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে অভিভাবক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক যাওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের নেতাদের সঙ্গে এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ৷
তিনি বলেন, এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না, শাস্তি পেতেই হবে। আমি শুধু সরকার প্রধান হিসেবে নয়, একজন মা হিসেবেও বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করব।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের ভাষ্যনুযায়ী, পুরো বৈঠকটি ছিল একটা আবেগঘন পরিবেশের।
এসময় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সার্বিক বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বুয়েটের হত্যাকাণ্ডসহ সার্বিক বিষয়ে বুধবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করবে ছাত্রলীগ ৷ প্রধানমন্ত্রীই ছাত্রলীগকে সংবাদ সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছেন৷
প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বৈঠক করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে, একটি ছেলেকে এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলা হবে, সেটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এই ঘটনার দোষীদের ছাড় দেয়া হবে না। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমরা কঠোর। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা দায়ের করা হয়েছে। যারা জড়িত ছিল তাদেরকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ রকম তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা কোনো সরকারের সময় নেয়া হয়নি। আইন অনুযায়ী এই ঘটনার বিচার হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষার জন্য আমরা যা করেছি পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ের কোনো সরকার তা করেনি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল। আমরা অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করেছি। এখন ক্যাম্পাসে কোনো অস্ত্রবাজী নেই। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটে চলমান আন্দোলন নিয়ে ছাত্রলীগকে ‘কিপ সাইলেন্ট’ থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছি না। ছাত্রলীগ বা সরকার অপরাধীদের পক্ষ নেয়নি। তাই ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে কেউ আন্দোলনটিকে রাজনৈতিক রং দিতে না পারে।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তা তা করা হয়েছে। অস্ত্রবাজরা এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই। এসব যাদের ভালো লাগছে না তারা ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধরেছি যখন সবাইকে ধরবো। কাউকে ছাড় দেব না। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মো. আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।