সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে জীবিকার উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া পাড়ি জমিয়েছিলেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব টিয়ারতলা গ্রামের সোনা প্রামানিকের ছেলে ফরিদুল ইসলাম (৩৫)। মালয়েশিয়ায় একটি দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। ফরিদুলের মৃত্যুর সংবাদ গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে পরিবারের মধ্যে শুরু হয় শোকের মাতম। তার এই অসময়ে চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। তবে তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন (৩২) বাবার বাড়িতে থাকা অবস্থায় জানতে পারে তার স্বামী ফরিদুল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। এ কথা শুনে দ্রুত তার স্বামীর বাড়িতে চলে আসেন তিনি। পরিবারের সবার কান্নায় তিনি ভেঙে পড়েছেন। তবে তাকে এখনও জানানো হয়নি তার স্বামী মারা গেছেন।
২০০১ সালে পারিবারিকভাবে দু’জনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সাংসারিক জীবনে অভাব অনটন থাকলেও ছিল না অশান্তি। এক ছেলে ইমন হোসেন (১৫) বর্তমানে ১০ম শ্রেণিতে পড়ে। অকালে বাবাকে হারিয়ে সেও শোকে পাথর হয়ে গেছে। ২০১৫ সালে সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে মালয়েশিয়ায় একটি কোম্পানিতে কনস্ট্রাকশনের কাজে যোগদান করে ফরিদুল। দীর্ঘ চার বছর পরে আগামী মাসেই তার দেশে ফেরার কথা ছিল। পরিবারের সদস্যরাও তার দেশে ফেরার দিন গণনা শুরু করেছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সে দেশে ফিরছে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই। তবে জীবিত নয় ফিরছে লাশ হয়ে। পরিবারের সদস্যদের এখন একটাই চিন্তা তাদের ছেলে তো মারা গেছে কিন্তু তাদের ছেলের স্ত্রী স্বামী মৃত্যুর খবর জানার পরে কেমন করে সইবে এ শোক।
নিহত ফরিদুলের ভাই নজরুল ইসলাম জানান, ধার দেনা করে জীবিকার সন্ধানে প্রায় চার বছর আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন ফরিদুল ইসলাম। তার আয়ে সংসারে ফিরেছিলো স্বচ্ছলতা। কিন্তু তার এই মৃত্যুর কারণে সব যেন শেষ হয়ে গেল।
ফরিদুলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে তার বৃদ্ধ বাবা, ভাইসহ পাড়া প্রতিবেশীরা শোকে নীরবে চোখের জল ফেলছেন। ফরিদের এ মৃত্যুর মাধ্যমে মৃত্যু ঘটেছে তার স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সবার স্বপ্নের। মৃত্যু হয়েছে একটি সুন্দর ভবিষ্যত সম্ভাবনার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।