আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সুলাহ-ই-কুলের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখতেন মুঘল সম্রাট আকবর। এখনো সেই রীতি বহাল আছে। তার এই মতাদর্শের সমর্থকরা অন্যান্য সম্প্রদায়ের বিশ্বাসকে সমীহ করেন।
আর সেই জায়গা থেকেই জন্ম নিয়েছিল দিন-ই-ইলাহি। সকল ধর্মের ভালো দিকগুলো নিয়ে তৈরি হয়েছিল এই ধর্ম। যদিও ভারতে তা বিরাট কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। তবে আকবরের সেই ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ যে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি, তার উদাহরণ মিলল করবা চৌথের দিন। হিন্দু ধর্মের রীতি মেনেই স্বামীর জন্য করবা চৌথ পালন করলেন আগ্রার মুসলিম নারীরা।
ওই রীতি অনুসারে স্বামীর সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন কামনায় দিনভর উপবাসে থাকেন স্ত্রী। তারপর চাঁদের মুখ দেখে স্বামীর হাতে পানি পান করে উপোস ভঙ্গ করেন। এভাবেই প্রতি বছর পালিত হয় করবা চৌথ। কিন্তু স্বামীর দীর্ঘ জীবন কামনায় যে এই ব্রত মুসলিম বা অন্য সম্প্রদায় মানতে পারবেন না, তেমনটা তো নয়? আর তাই এই রীতিতে বিশ্বাস রেখেই সদর ভাট্টি এলাকার ফাতিমা নাসিম বৃহস্পতিবার মন দিয়ে পালন করছেন এই ব্রত।
ফাতিমার কথায়, রমজানে ৩০ দিন উপবাস করি। আল্লাহর প্রতি সেটা আমার কর্তব্য। আর করবা চৌথ হলো আল্লাহর কাছে স্বামীর সুস্থ জীবনের প্রার্থনা করা।
একেবারে হিন্দু বাড়ির বধূর মতোই শাড়ি-গয়না পরে, দিনভর নির্জলা থেকে সন্ধ্যায় চাঁদ দেখেন তিনি। ফাতিমার মতোই শহিদ নগরের খাতুন জাহানও জানান, বিয়ের পরের বছর থেকেই করবা চৌথ পালন করে আসছেন তিনি। তার কথায়, এই উপবাসের সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি পাঁচ বেলা নামাজও পড়ি। আবার রমজানও পালন করি।
নূরজাহান বেগমও বিয়ের পর থেকেই করবা চৌথ করে আসছেন। বাড়ির লোকদের থেকে লুকিয়েই স্বামীর জন্য এই ব্রত পালন করতেন শুরুতে। এখন বিষয়টা সবাই জানেন। তিনি আরো জানান, হিন্দু নারীদের কাছে এটি উৎসবের মতো। তবে তাদের সম্প্রদায়ে জমকালোভাবে তেমন কিছু হয় না। রীতি মেনে স্বামীর দীর্ঘ জীবন কামনা করা হয়। জাতি-ধর্ম ভুলে স্বামী-স্ত্রীকে এক সুতায় বেঁধে দেয় করবা চৌথ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।