জুমবাংলা ডেস্ক: শিক্ষাবর্ষের ৮ মাস অতিবাহিত হলেও সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের ১২-১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যের বাংলা বই পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষকরাও চরম বিপাকে পড়েছে। অভিভাবকদের মধ্যে এ নিয়ে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ।
জানা যায়, যমুনার ভাঙনে বিধ্বস্ত চৌহালী উপজেলার যোগাযোগ ও প্রতিকুল পরিবেশের কারণে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশার চিত্র দীর্ঘ দিনের। এরপর আবার চলতি শিক্ষাবর্ষের ৮ মাস অতিবাহিত হলেও হাট ঘোড়জান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেখ চাঁদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রেহাইকাউলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হুইপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুরাদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরজাজুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরধীত পশ্চিমপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ১২-১৩টি প্রাথমিক বিদ্যলয়ের প্রথম শ্রেনীর অধিকাংশ কোমলমতি শিক্ষার্থী চলতি শিক্ষাবর্ষের বিনামুল্যের বাংলা বই থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
এসব প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণিতে প্রায় সাড়ে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে। বই না পাওয়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা বাংলার প্রকৃতি ও পরিবেশসহ নানা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর হাতে বই না থাকায় নিরুৎসাহিত হয়ে অন্যান্য ক্লাসের প্রতিও দিন দিন মনযোগ কমে যাচ্ছে এসব শিক্ষার্থীদের। একারনে শিক্ষকরা পাঠদানে গিয়ে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। তারা ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের বাংলা পড়া বোর্ডে লিখে ক্লাস নেয়ায় পাঠদানের সঠিক প্রভাব পড়ছে না কোমলমতিদের উপর। এবিষয়ে হাট ঘোড়জান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর শিক্ষার্থী লামিয়া, ইব্রাহিম ও মীম জানান, আমরা এখনও বাংলা হাতে বই পাই নাই। ইংরেজি ও অংক ভাল পড়তে জানি না। বাংলা বইয়ে ভাল ভাল ছবি ও গল্প থাকে। বাংলা বই না থাকায় আমরা নিয়মিত স্কুলে যাই না।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন জানান, তার স্কুলের প্রথম শ্রেণির ৬৮ জন শিক্ষার্থীর কেউই বাংলা বই হাতে পায়নি। বছরের শুরুতে শিক্ষা অফিসে বারবার যোগাযোগ করেও কোন কাজ হয়নি। এজন্য বাধ্য হয়ে পুরানো বই জোড়াতালি দিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। এছাড়া শেখ চাঁদপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল জানান, ৫৪ জন প্রথম শ্রেনীর শিক্ষার্থীকে শিক্ষা অফিস মাত্র ১৭টি বাংলা বই দিয়েছে । প্রতিটি ব্রেঞ্চে একটি করে বই দিয়ে ও বোর্ডে লিখে নামমাত্র ক্লাস নিতে হচ্ছে। মুরাদপুর গ্রামের অভিভাবক মোজাম্মেল হোসেন ও চান তালুকদার জানান, শিক্ষা অফিসের অবহেলায় ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা বিনামুল্যের বই থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এর জন্য সংশ্লিষ্টরা দায় এড়াতে পারেনা। বই না থাকায় ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে চায় না।
এদিকে শিক্ষাবর্ষের সাড়ে ৮ মাস চলে যাচ্ছে এখনও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌছায়নি এটা সত্যি দুঃখজনক স্বীকার করে চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুজ্জামান খান পিবিএ’কে জানান, আমাদের করার কিছুই নেই, বান্ডিল ভুলের কারণে প্রথম শ্রেণির বাংলা বই আসেনি। পরে চাহিদা পাঠিয়েছিলাম। তবে সে মোতাবেই প্রথম শ্রেণির বাংলা বই পাইনি। বাধ্য হয়ে পুরনো বই ও কিছু স্কুলের অল্প অল্প বই দিয়ে ক্লাস চালিয়ে যেতে হচ্ছে। সূত্র: পিবিএ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।